তাদের প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদের পর লাশ ঐ দেশেই দাফন করা হয়েছে৷ একটি গুদামে ডাকাতি এবং ওই গুদামের মিসরীয় নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল তারা।

হত্যার অভিযোগে সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশির প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদ করা হয়েছে তারা হলেন, মামুন আব্দুল মান্নান, ফারুক জামাল, সুমন মিয়া, মোহাম্মদ সুমন, শফিকুল ইসলাম, মাসুদ শাসুল হক, আবু আল হোসাইন আহমেদ, মতিউর আল রহমান৷ ঐ ঘটনায় আরো ৩ বাংলাদেশিকে বেত্রাঘাতসহ কারাদণ্ড দেয়া হয়৷

যাদের শিরশ্ছেদ করা হয়েছে তাদের লাশ সৌদি আরবেই দাফন করা হয়েছে৷ সেখানকার আইন অনুযায়ী তারা এধরনের লাশ ফেরত দেয়না৷ তাই লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই৷

লেবার কাউন্সিলর জানান সৌদি আদালত ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করে ২০০৮ সালে৷ এরপর থেকে তারা দণ্ড কমান বা মওকুফের নানা চেষ্টা করেছেন৷ এমনকি বাংলাদেশের সেময়ের রাষ্ট্রপতিও সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন৷ কিন্তু নিহতের পরিবার ছাড়া আর কারোর দণ্ড মাফ করার অধিকার সৌদি আইনে নেই৷ নিহতের পরিবারও দণ্ড মওকুফে রাজি হয়নি৷ তাই বাংলাদেশি দূতাবাসের আর কিছু করার ছিলনা৷

একসঙ্গে এতসংখ্যক বিদেশি নাগরিকের শিরশ্ছেদের ঘটনা নজিরবিহীন। মাত্র একজনকে হত্যার অভিযোগে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুদ- কার্যকরের ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশের কূটনৈতিক সক্ষমতা। এ ব্যাপারে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, সৌদি আরবের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ এবং উচ্চতর উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনক্রমে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ৮ বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুদ- গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার স্থানীয় আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে হাসান আল সাইদ নামে এক মিসরীয় নাগরিক হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ কোনো বিদেশি নাগরিকের মৃত্যুদ- কার্যকরের আগে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে অবহিত করে না।

ওই শ্রমিকরা ভাগ্যের অন্বেষণে সৌদি আরবে যান। কিন্তু তাদের আর ভাগ্য ফিরিয়ে দেশে আসা হল না। ধর্মের নামে কঠিন এক বিচারে তাদের প্রাণ গেল। আর এ মৃত্যুও হল অত্যন্ত অমানবিক ও হৃদয়বিদারক পরিবেশে। ফাঁসির আসামির সঙ্গে বিশ্বের যেকোনো ধর্মে সম্মানজনক আচরণের কথা বলা হলেও সৌদি সরকার তার ধার দিয়েও যায়নি এমনটিই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম।

এ ব্যাপারে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের এপ্রিলে একটি গুদামে ডাকাতি এবং ওই গুদামের মিসরীয় নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল তারা।
অভিযোগ উঠেছে, সরকার বিদেশে শ্রমিক পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ব্যাপারে যতটা গুরুত্ব দিচ্ছে শ্রমিকের নিরাপত্তার ব্যাপারে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। এটাই এ ঘটনার বড় প্রমাণ।