প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের দরিদ্র নারীদের দুর্দশা লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ।বিশ্বের দরিদ্র নারীদের শোচনীয় দুরবস্থা থেকে বের করে আনতে বিশ্ব নেতাদের নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জাতিসংঘে সাধারণ অধিবেশনে এক সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন ।
‘গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং খাদ্য ও পুষ্টিগত নিরাপত্তা’ শীর্ষক এই সেমিনারের সহ-আয়োজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ সরকার ও রয়েল ডাচ সরকার।২০১০ সালের ‘ওয়ার্ল্ড পোভার্টি অ্যান্ড হাঙ্গার রিপোর্ট’-এর পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে সেমিনারে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বে ১৩৪ কোটি লোক দিনে ১.২৫ ডলার বা তারও কম আয়ে জীবনযাপন করে। আর এই অতি দরিদ্র শ্রেণীর ৭০ শতাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু। এর কারণ হিসেবে সংঘাত ও বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই অন্যায়ের প্রতিবিধান এবং বিশ্বকে সবার জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত স্থানে পরিণত করা জরুরি। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে পুরুষের সঙ্গে নারীর সমান অধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চাকরি নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিধি রাখা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষমতায়নকেও সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, নারীর খাদ্য ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার পূর্বশর্ত হলো আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের অধিকতর সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা। এতে নারী সম্পদের অধিকার পায়, তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। ফলে দারিদ্র্যের ‘নারীকরণ’ও কমে আসে।’
সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হার দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।